ল্যাপটপ বর্তমান সময়ে যেমন বিশেষ গুরুত্ত্বপূর্ণ তেমনি ভবিষ্যত এ আর ও বেশি গুরুত্ব চমৎকৃত ভাবে বেড়ে যাচ্ছে। আপনার পড়াশোনার কাজই হোক আর গবেষণার কাজই হোক আপনার একটি ভালো ল্যাপটপ প্রয়োজন। তবে আপনি যদি নতুন ব্যবহারকারী হন বা পুরনো টা কে বাদ দিয়ে নতুন ভালো মানের laptop কিনতে চান তাহলে, নিচের তথ্য গুলো আপনার জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে ।
আপনার যা যা জানা প্রয়োজনঃ
১। দীর্ঘ ব্যাটারি ব্যাকআপ:
অনেক সময় এমন হয় আপনার ক্লাস সারাদিন না থাকলেও আপনাকে সারাদিন ক্যাম্পাস এ থাকতে হয়।আপনি যখন বাহিরে কম্পিউটার ব্যবহার করবেন তথন দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাটারি ব্যাকআপ প্রয়োজন হবে। পাওয়ারফুল ব্যাটারি না হলে আপনার কোনো কাজ করার আগেই ব্যাটারী চার্জ শেষ হয়ে যেতে পারে । তাই একটি ল্যাপটপ কম্পিউটারের জন্য পাওয়ারফুল ব্যাটারি বিশেষ প্রয়োজন। এদিক থেকে বিবেচনা করলে ইন্টেলের চতুর্থ প্রজন্মের প্রসেসর (Intel’s fourth-generation Core processor) গুলোর বেশ ব্যাবহারযোগ্য মূল্যও কম, তেমনি দীর্ঘ বিদ্যুৎ চাহিদার মেটাতে বেশ উপযুগি। একরম একটি কম্পিউটার খুজে পেতে পারেন অনেক সহজে 4000 সিরিজের গুলো থেকে। যেমন- কোর আই থ্রি (Core i3-4010U) ইত্যাদি।
২। ওজন কম ও ডাটা স্টর বেশি:
কম ওজন এর ল্যাপটপ বহন করা এবং কাজ এর জন্য সব থেকে উপযুগি কারণ চার্জ বেশি থাকে এবং বেশি কাজ করা যায় । আপনি যদি একট ট্যাবলেট পিসি নিয়ে বাহিরে যান, যেমন- মাইক্রোসফট এর সারফেস প্রো (Microsoft’s Surface Pro) ওজন মাত্র ২ পাউন্ড বা 908 গ্রাম কিন্তু একটি সম্পূর্ণ ল্যাপটপ থেকে অত্যন্ত বিকল্প সক্ষম।
এটি সহনশীল পাতলা যে কোনো ব্যাগে বহনযোগ্য। ডিসপ্লে এর আলোতে কোনো সমস্যা হয় না । নোটবুক এবং ট্যাবলেটের সেরা বৈশিষ্ট্যগুলি সমন্বিত সম্পূর্ণ কীবোর্ড এবং হাইব্রিড ল্যাপটপের ট্যাবলেটগুলি প্রচলিত ল্যাপটপের মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় ।
৩। আরামদায়ক কীবোর্ড:
যখন আপনাকে অনবরত টাইপ করতে হয় তখন আপনার মাথায় একটা কথা রাখতে হবে ,আপনার কীবোর্ড টি ব্যবহার এর জন্য আনন্দদায়ক হতে হবে এবং কীবোর্ড টি আপনার হাত এর সাথে উপযোগী হতে হবে যাতে করে আপনি টাইপ করতে সাচ্ছন্দবোধ করেন ।
৪। একাধিক কাজের জন্য বড় মনিটর:
এক সাথে একাধিক কাজের উপযোগী মনিটর/পর্দা আছে, যা মাল্টিটাস্কিং জন্য বেশ ভালো। গবেষণার এবং ট্রাম পেপারের কাজ সহজেই করা যায় তেমনি গান শোনা, ভিডিও দেখা এবং চ্যাটিং সুন্দর ভঙ্গীতে করা যায়। একটি 14 ইঞ্চি বা বড় প্যানেল একটি আরামদায়ক কাজ করার জন্য খুব উপযুগি এবং পুরো মনিটর এর উপর মনোযোগ দিতে পারবেন।
৫। ওয়ারেন্টি বা সুরক্ষা পরিকল্পনা :
সাধারণত, “বর্ধিত ওয়ারেন্টি”, খুচরা বিক্রেতারা আপনার থেকে দাম একটু বেশি নিতে পারে এবং তারা আপনাকে ওয়ারেন্টিসহ সকল দায়ীত্ব নিতে পারে।যখন আপনি আপনার স্কুল/কলেজ এর জন্য ল্যাপটপ কিনবেন তখন অবশ্যই আপনি আপনার টাকার পরিমান অনুযায়ী প্লান নির্ধারণ করবেন । এমন ল্যাপটপ নিবেন না যেটা আরামদায়ক নয় বা বিলাসবহুল যেটা কে আনা নেওয়া কষ্টকর হয়। তাই নিশ্চিত হতে হবে কোনটা বহন করা সহজ এবং কভার/ব্যাগ আছে।
৬। নিরাপত্তা সফটওয়্যার:
এই ধরনের ল্যাপটপে পবেন দুই ধরনের নিরাপত্তা সফটওয়্যার, যে গুলো হলো নর্টন অ্যান্টিভাইরাস, এবং ম্যাকাফি ইন্টারনেট সিকিউরিটি যা ডাটা স্টোর ও পুরো কম্পিউটার সুরক্ষিত রাখবে ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার মত সমস্যা থেকে। আরো ভালো বিষয় যে এখানে রয়েছে অনেক গুলো প্রয়োজনীয় অপশন। যেমন- এভাস্ট ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস এবং মাইক্রোসফট সিকিউরিটি এসেন্সিয়াল- যা সম্পূর্ণ ফ্রি।
এছাড়াও অন্য ধরনের সফটওয়্যার আপনাকে নিরাপত্তা দিবে যা পিসি চুরি ও হারিয়ে গেলে উদ্ধার পেতে সহয়তা করবে। GadgetTrak, হিডেন এবং লোজেক প্রোগ্রাম গুলো আপনাকে হারানো ল্যাপটপ ফেরত পেতে সহয়াতা করতে পারে।
আপনার যা যা বিবেচনা করার প্রয়োজন নেই:
১। কুয়াড-কোর প্রসেসর:
ভালো কাজ করার জন্য বেশি শক্তি সম্পন্ন প্রসেসর অবশ্যই ভালো। কিন্তু বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর জন্য সুপার পাওয়ার কম্পিউটার প্রয়োজন হয় না। অতিরিক্ত কোর কম্পিউটেশনালাইজেশনের জন্য ভারী কাজগুলির জন্য উপকারী, যেমন ট্রান্সকোডিং অডিও এবং ভিডিও ফাইল, অথবা ডিজিটাল ফটোগুলি বা ভিডিও সম্পাদনা করা। আপনি যদি কেবল মাইক্রোসফট অফিস এ কাজ করেন এবং ওয়েব সার্ফিং করেন, তাহলে ডুয়াল কোর প্রসেসরটি আপনাকে সত্যিই প্রয়োজন, এবং এটি আপনার ব্যাটারীর জন্য বেশ কাজের হবে এবং ব্যাটারিও অনেক ভালো ব্যকাআপ দেয়।
২। আলাদা গ্রাফিক্স প্রসেসরঃ
আপনি যদি হার্ড-কোর গেম খেলেন তাহলে আপনার ইনভেস্ট ও বাড়াতে হবে। আপনার ল্যাপটপ ছাড়াও একটি গেম কনসোল কিনতে হবে। তাহলে আপনাকে হেভি গেমিং ল্যাপটপ সাথে একটি নির্বিশেষে গ্রাফিক্স কার্ড যা আপনাকে গ্রিড করতে সাহায্য করে। আপনার প্রধান মেশিন লাইটওয়েট, পাওয়ার-কার্যকর, পাতলা এবং হালকা ল্যাপটপ হওয়া উচিত।
৩। সলিড-স্টেট ড্রাইভ/এস এস ডি:
এই স্টোরেজ ডিভাইসটি দ্রুত, স্থির যে কোন নোটবুক পাওয়া যায়। এটিতে মুভিং পার্ট এসএসডি (SSD) অপশন অছে। যদি ল্যাপটপ পড়ে যায় বা আঘাত পায় তাহলে এটি থেকে ডাটা হারানোর সম্ভবনা খুব কম। কিন্তু SSD এর দুটি উল্লেখযোগ্য অপূর্ণতা রয়েছে: কম ক্ষমতা এবং উচ্চ খরচ ।যদিও এমনকি সস্তা ল্যাপটপে 750 জিবি ডাটা ষ্টোরে বড় হার্ড ড্রাইভ। নিম্ন-মূল্যের নোটবুকগুলিতে এসএসডি সাধারণত শুধুমাত্র 128 গিগাবাইট স্টোরেজ সরবরাহ করে।
আমাদের এসএসডি (SSD) প্রয়োজন আছে কিন্তু কলেজ এর জন্য বেশি স্টোরেজ এর প্রয়োজন হয় ।
৪। একটি টাচস্ক্রিনঃ
উইন্ডোজ 8 স্পর্শ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, কিন্তু একটি টাচস্ক্রীন একটি বিলাসিতা যা একটি ছাত্র সহজে ছাড়া কাজ করতে পারে ।আপনি উইন্ডোজ-৮ ল্যাপটপে সাধারণত টাচপ্যাড ও কিবোর্ড ব্যবহার করতে পারেন । আপনি একটি ল্যাপটপের স্পর্শপ্যাড এবং কীবোর্ড ব্যবহার করে কোনও উইন্ডোজ 8 কমান্ডটি সম্পাদন করতে পারেন, তাই আপনার কাছে একটি টাচ স্ক্রিন পেতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করার কোন ভাল কারণ নেই। একটি পিসি’র গুরুত্বপূর্ণ উপদান হলো সিপিইউ, মেমরি, এবং স্টোরেজ ক্ষমতা। তাই সিপিইউ, মেমরি, এবং স্টোরেজ ক্ষমতা যেমন বেশি জটিল উপাদানগুলির উপর ফোকাস করুন।
৫। ৪জি বেতারঃ
একটি কম্পিউপারে নেটওয়ার্ক এর সাথে যুক্ত থাকা গুরুত্বপূর্ণ, এটিতে ৪জি+ বেতার সংযোগ সম্পন্ন। এখন অনেক কম্পানি ল্যাপটপে অফার করছে মোবাইল ব্রডব্যান্ড সার্ভিস। তাই আপনার যে কোনেটা পছন্দ করা উচিত নয়। বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই হটস্পট ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা অনলাইন ব্রাউজ করতে পারে যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশে পাশে। শিক্ষার্থীরা মোবাইল এর মাধ্যমে নেটওয়ার্ক এর সাথে যুক্ত থাকতে পারে ।