বাংলাদেশে কেন ইকমার্স সাইট জনপ্রিয় হচ্ছে?
বাংলাদেশে এখন বেশ কিছু ইকমার্স সাইট বিজনেস করছে। আরও অনেকেই এই লাইনে পা রাখার চিন্তা ভাবনা করছেন। অথচ কিছুদিন আগেও চিত্রটা ছিল একেবারেই ভিন্ন। কয়েক বছর আগেও ভাবা হতো- বাংলাদেশে অনলাইন বিজনেস করে লস ছাড়া লাভ হবে না, কেউ অনলাইনে পন্য কিনবে না। অথচ এখন অবস্থাটা দেখুন! প্রায় সবাই অনলাইনে কিছু না কিছু কিনছে! জামা কাপড়, এক্সেসরিজ থেকে শুরু করে এমনকি চালডাল, তেল, নুন সাবান- সবই অনলাইনে কিনছে মানুষ। এর প্রধান কারণ শহরের যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততা আর নিদারুণ ট্র্যাফিক জ্যাম। মানুষের এখন আর দোকানে গিয়ে, দেখে-শুনে-বেছে কিছু কেনাকাটা করার সময় কই? ঘরে বসে অর্ডার দিলে পন্য চলে আসছে। এই সুবিধা কার না চাই? তাই ইদানিং বাংলাদেশে অনলাইন বিজনেস হয়ে উঠেছে আত্মকর্মসংস্থানের এক দারুণ উপায়।
আপনি কেন একটি ইকমার্স সাইট করবেন?
বেশ কিছু ইকমার্স সাইট বাংলাদেশে বেশ ভালো বিজনেস করছে। পাশাপাশি আছে অজস্র ফেসবুক শপ। একটি ইকমার্স সাইট তৈরির তুলনায় ফেসবুক শপ করে বিজনেস করাটা অনেক বেশি সহজ। এতে টেকনিক্যাল প্রয়োজনে কোন টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে না। মার্কেটিং করাও বেশ সহজ হচ্ছে। তবে আপনি যদি একটি পূর্ণাঙ্গ অনলাইন বিজনেস স্থাপনে আগ্রহী হন, তাহলে আপনার জন্য একটা ইকমার্স শপ খোলাটা বাঞ্ছনীয়। শুধুমাত্র ফেসবুক কেন্দ্রিক বিজনেস করে আপনি হয়ত এই মুহূর্তে নিয়মিত বিক্রি করে যেতে পারছেন, কিন্তু লং রানে সেটা লাস্টিং করার সম্ভাবনা কম। কারণ মানুষ ইকমার্স সাইট আছে এমন মার্চেন্টদের বেশি বিশ্বাস করে থাকে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইকমার্স সাইট করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা কি কি?
কিন্তু একটা ভালো মানের ইকমার্স সাইট তৈরি এবং রক্ষনাবেক্ষন করা চাট্টি খানি কথা নয়। আপনি নিজে যদি ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ জানেন, তাহলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে একটা ডোমেইন-হোস্টিং সার্ভিস নিয়ে বিজনেস স্টার্ট করে দিতে পারেন। তবে যদি নিজে কাজ না জানেন, সেক্ষেত্রে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হবে ভালো কোন এজেন্সি থেকে টোটাল ওয়েবসাইট তৈরির কাজ করাতে গেলে। এত টাকা শুরুতেই ইনভেস্ট করা মুশকিল। তবে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই, এই সমস্যারও সমাধান রয়েছে। আসুন দেখি কি সেই সমাধান।
ইকমার্স সাইটের বিকল্প সমাধান- মার্চেন্ট একাউন্ট
যারা এই মুহূর্তে অনেকগুলা টাকা খরচ করে ইকমার্স সাইট চালু করতে পারছেন না, তারা বিভিন্ন মাল্টি ভেন্ডর ইকমার্স সাইট এর আন্ডারে একটা মার্চেন্ট একাউন্ট করে ইজিলি বিজনেস করতে পারছেন। বিষয়টা আর একটু বুঝিয়ে বলছি – ধরুন, আমার একটা ইকমার্স সাইট আছে। আমি এই সাইটে নিজে কোন পন্য বিক্রি করি না। আমার সাইটে আমি মার্চেন্ট একাউন্ট করার অপশন রেখেছি। ফলে যে কেউ এসে একটা মার্চেন্ট একাউন্ট ওপেন করতে পারছে। তারা একাউন্ট করার পর তাদের আমি একটা নির্দিষ্ট স্থান দিচ্ছি আমার সাইটের আন্ডারে বিজনেস করার। এখানে তারা নিজেদের পন্য ডেসক্রিপশন, বিলিং, শিপিং ইনফো- সব দিতে পারবেন। ধরে নিলাম আমার সাইটের নাম ছিলো- bestonlineshop.com, এখানে এক মার্চেন্ট একাউন্ট করেছেন যার শপের নাম হচ্ছে – বিগবাজার। তাহলে তার শপের নাম হবে- bestonlineshop.com/bigbazar. এই এড্রেসে গেলে যে কেউ ঐ মার্চেন্ট এর সাজানো পন্য গুলো দেখতে পাবে। ফলে এই এড্রেসটি ঐ মার্চেন্ট এর জন্য ওয়েবসাইটের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। নিশ্চয়ই প্রস্ন জাগছে – এতে করে ঐ প্ল্যাটফর্ম প্রভাইডার এর লাভ কি? লাভ হচ্ছে – কমিশন। প্রত্যেক সেল থেকে ওরা একটা নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন নেবে। তবে আঁতকে ওঠার কোন কারণ নেই, এই কমিশনের পরিমান একেবারেই নগণ্য।
কোথায় আপনি একটি মার্চেন্ট একাউন্ট করতে পারেন?
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বেশ কিছু ইকমার্স সাইট কাজ করছে যারা মুলত মার্চেন্ট একাউন্ট সার্ভিস প্রভাইডার। এখানে মানুষ আপনার পন্য কিনবে, কিন্তু কিনবে ঐ ইকমার্স সাইট থেকে। এমন কয়েকটি জনপ্রিয় ইকমার্স প্ল্যাটফর্ম প্রভাইডার বাংলাদেশে রয়েছে। যেমনঃ আজকের ডিল, দারাজ ইত্যাদি। আর কিছু আন্তর্জাতিক ইকমার্স প্রভাইডারের নাম বলতে পারি যারা বেশ শক্ত অবস্থান সৃষ্টি করেছে। জেমনঃ শপিফাই, বিগকমার্স। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সেরা সার্ভিস দিচ্ছে যে সাইটটি তা হচ্ছে – টপঅলব্র্যান্ড। এখানে শপ ক্রয়া সহজ, কমিশন রাখে একদম কম এবং সুযোগ সুবিধা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। আজ আমরা টল অল ব্র্যান্ড এর এই ভেন্ডর একাউন্ট সার্ভিস সম্পর্কে জানবো।
TopAllBrand ভেন্ডর প্রোগ্রাম কি?
TopAllBrand বাংলাদেশের প্রথম মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। এরা শুরু মাত্র নিজস্ব পণ্য বিক্রয় করে না, পাশাপাশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গুনগত মানসম্পন্ন পন্য সামগ্রী ক্রেতার দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া এদের ব্যবসার প্রধান উদ্দেশ্য। সেই লক্ষে তারা আয়োজন করেছে TopAllBrand ভেন্ডর প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামের আওতায় তারা বাংলাদেশের সেরা ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের একই ছাঁদের নিচে একত্রিত করেছে। একজন পণ্য বা সেবা বিক্রয়কারী ব্যক্তি তাদের ওয়েব প্ল্যাটফর্মে অতি সহজে একটি ই-কমার্স শপ খুলতে পারবেন এবং তাদের নিয়মিত এক মিলিয়ন ক্রেতার নিকট নিজেদের পন্য বিক্রয় করতে পারবেন।
ই-কমার্স ব্যাবসায় আগ্রহী ব্যক্তিদের প্রধান দুটি অসুবিধা হল- একটি সুন্দর ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি ও মেইনটেইন করা এবং পণ্যের প্রচার প্রচারণা বৃদ্ধি করা। দু’টি সমস্যারই সেরা সমাধান TopAllBrand. এখানে আপনি সম্পূর্ণ বিনা খরচে একটি ভার্চুয়াল শপ তৈরি করতে পারবেন। আপনার শপে যে সমস্ত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে করবেন, তা আমাদের ওয়েবসাইটের হোম পেইজে চলে আসবে এবং প্রোডাক্টটি যদি মান্সম্মত হয় তাহলে এদের প্রায় এক মিলিয়ন ভিজিটর থেকে অনেকেই সেটি কিনতে আগ্রহী হবে!
এখনই রেজিস্ট্রেশন করুনঃ টপ অল ব্র্যান্ড ভেন্ডর রেজিস্ট্রেশন
কেন TopAllBrand এর ভেন্ডর হবেন?
TopAllBrand উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের যে সমস্ত ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা গুনগত মান সম্পন্ন পন্য বিক্রয় করছে, তাদের একই প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করার। ফলে একদিকে যেমন আপনি বিনা খরচায় একটি নিজস্ব ই-কমার্স শপ মেইনটেইন করতে পারছেন, ঠিক তেমনি পণ্যের প্রচারের জন্য আপনাকে বাড়তি কোন পরিশ্রম করতে হচ্ছে না।
আপনি যদি ইতিমধ্যে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট স্থাপন করে থাকেন, তাহলে এদের প্ল্যাটফর্মে আপনার বিজনেসের আরও একটি উইং খোলার মাধ্যমে আপনার ব্যবসায়িক আওতা বৃদ্ধি পাবে।
আপনি যদি F-commerce বিজনেস বা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে পণ্য কেনা বেচা করে থাকেন, তাহলে এদেদের ওয়েবসাইটে একটি ই-কমার্স শপ খুলে সেই শপের সাথে পেজের লিংক করে পণ্যের প্রচার বাড়াতে পারবেন।
আপনি যদি সাধারণ কোন দোকান বা বিপণীর মালিক হউন, তাহলে TopAllBrand আপনার জন্য খুলে দিতে পারে অনলাইনে বিজনেস করে বাড়তি মুনাফা অর্জনের অপার সম্ভাবনার দুয়ার।
TopAllBrand এর ভেন্ডর হওয়ার প্রক্রিয়া
দেখুন কত সহজে আপনিও হতে পারেন একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মালিকঃ
১. ভেন্ডর হওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করুন
এটি ভেন্ডর হওয়ার প্রথম ধাপ। এজন্য প্রথমে আপনাকে এদের ওয়েবসাইটের ভেন্ডর রেজিস্ট্রেশন পেইজে যেতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ফর্ম ফিল আপ করে সাবমিট দিয়ে ভেরিফাইড হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
২. শপে মানসম্মত প্রোডাক্ট এড করতে শুরু করুন
একটি ই-কমার্স শপ সেট আপ হয়ে যাওয়ার হয়ে যাওয়ার পরের ধাপ হচ্ছে শপে প্রোডাক্ট এড করা। প্রতিটি প্রোডাক্ট এড করার সময় আপনার পছন্দ মত প্রডাক্ট এর নাম, বর্ণনা, ফিচার, নমুনা ছবিসহ বিস্তারিত পোস্ট করতে পারবেন।
৩. ড্যাসবোর্ডে গিয়ে ই-কমার্স শপ সেট আপ করুন
আপনার ভেন্ডর রিকোয়েস্টটি ভেরিফাইড হয়ে যাওয়ার পর আপনাকে ইউজার নেইম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে আমাদের ড্যাসবোর্ডে লগ ইন করতে হবে। এরপর আপনি প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে একটি শপ সেট করতে পারবেন।
৪. প্রয়োজনে ডিসকাউন্ট এড করুন এবং প্রচার করুন
আপনি যদি আপনার কোন প্রোডাক্ট অথবা শপের সমস্ত প্রডাক্টে ডিসকাউন্ট প্রদান করতে চান তাহলে আপনার জন্য কুপন এড করার ব্যবস্থা আছে। আপনি চাইলে এই কুপন লিংক বিলি করতে পারেন পণ্যের প্রচারের জন্য।
৫. আপনার শপের প্রয়োজনীয় শর্তাবলি সংযুক্ত করুন
আপনার শপ থেকে পন্য ক্রয়ের সময় ক্রেতাকে যে সকল শর্ত মানতে হবে তা উল্লেখ্য করুন। সেই সাথে পণ্য ক্রয়ের জন্য পেমেন্ট প্রক্রিয়া ও পণ্য সরবরাহ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি প্রদান করুন।
৬. পরিসংখ্যান দেখুন এবং টাকা উত্তোলন করুন
আপনি শপের সমস্ত অর্ডার ট্র্যাক করতে পারবেন এবং যেকোনো সময় বিক্রয়ের পরিসংখ্যান দেখতে পারবেন। বিক্রয়কৃত অর্থ আপনার ভেন্ডর একাউন্টে জমা থাকবে, যেকোনো সময় তা ব্যাংকে উইথড্র করতে পারবেন।
প্রন্য ক্রয়ের সময় ক্রেতা কীভাবে পেমেন্ট করবেন? পেমেন্টের অর্থ কোথায় জমা থাকবে?
এরা এই ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখে। তাদের সাথে ভেন্ডর শপ চালু করার পর তাদের ফান্ড সংক্রান্ত ডাটাবেজে আপনার নামে একটি আলাদা হিসেব খোলা হবে। ক্রেতা প্রোডাক্ট এর জন্য পেমেন্ট করার সাথে সাথে তাদের ডাটাবেজে তা চলে যাবে এবং আপনার ব্যালেন্সে তা আপডেট করা হবে। আপনি চাইলে যেকোনো সময় এই অর্থ আপনার ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করে নিতে পারবেন।
একটি ভেন্ডর একাউন্ট করা, একাউন্টে প্রোডাক্ট এড করা এবং বিক্রিতে কত খরচ হবে?
এই প্ল্যাটফর্মে একটি ভেন্ডর শপ খোলা এবং শপে প্রোডাক্ট আপলোড করা সম্পূর্ণ ফ্রি! আপনি যেকোনো সময় শপে লগ ইন করতে পারবেন এবং যত খুশি প্রোডাক্ট এড করতে পারবেন। এই জন্য আপনাকে কোন প্রকার চার্জ দিতে হবে না। তবে প্রোডাক্ট বিক্রয়কালে আমাদের বিক্রয় মূল্যের উপর ৫% কমিশন কেটে রাখা হবে। ৫% কমিশন বাদে বাকি টাকা আপনার একাউন্ট ব্যালেন্সে যোগ হবে।
আপনি কোন কোন ধরণের প্রোডাক্ট আপনার ই-কমার্স শপে বিক্রি করতে পারবেন?
আপনি নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় যেকোনো পণ্য আমাদের ওয়েবসাইটের প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করতে পারবেন। পুরুষ-মহিলা-বাচ্চাদের পোশাক, জুতো ও এক্সেসরিজ; কম্পিউটার, ক্যামেরা, মোবাইল ও যেকোনো ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি; খেলাধুলার সামগ্রী, ফিটনেস আইটেম; স্ক্রিন কেয়ার, জুয়েলারি সহ আরও অনেক কিছুই বিক্রয় করা যাবে। তবে আপনি প্রোডাক্ট এড করার আগে আমাদের হোম পেইজের মেনুটা ভাল ভাবে ঘুরে দেখুন।
একাউন্ট থেকে কিভাবে উইথড্র করা যায়? কতক্ষন সময় লাগবে উইথড্র পেতে?
বিপুল সংখ্যক ভেন্ডররা নিয়মিত উইথড্র রিকোয়েস্ট করে থাকেন। এর ফলে এদের প্রতিদিন প্রচুর উইথড্র রিকোয়েস্ট হ্যান্ডেল করতে হয়। তাই ওরা সর্বনিন্ম উইথড্র এর পরিমান ১০০০ টাকা ফিক্সড করেছে। যেকোনো উইথড্র রিকোয়েস্ট ওয়ার্কিং ডে তে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রসেস করা হয়। তবে আপনার যদি ইমার্জেন্সি উইথড্র করার প্রয়োজন হয় তাহলে কারণ জানিয়ে টপ অল ব্র্যান্ড এর সাপোর্ট টিমের কাছে মেইল করুন।
আর বিস্তারিত জানার জন্য ভিজিট করুনঃ ফ্রি অনলাইন শপ
আশাকরি পোষ্টটি আপনাদের উপকার করতে পেরেছে। অনেক ধন্যবাদ কস্ট করে পড়ার জন্য।