ই-কমার্স বাংলাদেশে একটি সম্ভাবনাময় ইন্ডাস্ট্রি। গত ২ বছরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ই-কমার্স সাইট। নিজের প্রোডাক্ট খুব সহজে কাস্টোমারদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সবাই এখন দ্বারস্থ হচ্ছে ই-কমার্স সাইটের। যদিও একটু ছোট পরিসরে ফেইসবুক কেন্দ্রিক অনেক ব্যাবসাই গড়ে উঠেছে, কিন্তু যারা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছে তারা এখনই মনোযোগ দিচ্ছেন ই-কমার্স সাইটে। প্রযুক্তি জায়ান্ট প্রতিষ্টান এপল এবং গুগলকে চেস করে এমাজনের সর্বোচ্চ ব্র্যান্ড ভ্যালুই বোঝাচ্ছে দুনিয়াব্যাপি ই-কমার্সের জয়জয়কার।
বাংলাদেশে গত ৩-৪ বছরে অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স ব্যাবসা অডিয়েন্স তৈরীর একটা প্রসেসে ছিলো। প্রথম প্রথম অনেকে বিশ্বাস না করলেও এখন অনেকেই অনলাইন মার্কেটপ্লেসের উপর নির্ভর হয়ে গেছেন, যেটা তৈরী করেছে ব্যাবসার নতুন দিগন্ত। দৈনন্দিন ব্যাবহারিক জীবনের সব ধরণের প্রোডাক্ট ই আমরা পেতে পারি ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস থেকে। সময় সেভ করার পাশাপাশি প্রায় সময় মার্কেটপ্লেসগুলোর বিভিন্ন অফার প্রাইস বরাবর ই চোখ ধাঁধানো।
পশ্চিমাদের অনুসরণে এখন আমাদের বাংলাদেশে ও আয়োজন হচ্ছে, দশ-দশ , এগারো-এগারো, ব্ল্যাক ফ্রাইডে, স্টার সানডে, সাইবার মানডে ইত্যাদি। এতে সন্তোষজনক পরিমাণে সেলস ও হচ্ছে বলে ই-কমার্স মার্কেটপ্লেসগুলোর দাবী। এতে যেমন বাড়ছে গ্রাহকের সংখ্যা ঠিক তেমনি বাড়ছে প্রোডাক্ট সেলকারী ভেন্ডরের সংখ্যা ও। এখন অনেকেই খুব ছোটোখাটো পুঁজি নিয়ে ইম্পোর্টেড প্রোডাক্ট সহ যুক্ত হচ্ছে বড় বড় মার্কেটপ্লেসগুলোতে।
দিন-দিন উল্লেখযোগ্য হারে গ্রাহক ও বিক্রি বাড়লেও অনেক সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মার্কেটপ্লেইসগুলোর ভ্যারিফাইড পেইজে গ্রাহকদের অসন্তুষ্টির কথা দেখা যায়। যদি ও অনেক মার্কেটপ্লেস ই ফ্রি রিটার্ণ এর সুযোগ রাখছে, যাতে প্রোডাক্ট পছন্দ না হলে কাস্টোমার রিটার্ণ করে দিতে পারে; কিন্তু গ্রাহকদের একটা নির্দিষ্ট অংশের প্রোডাক্টের কোয়ালিটি নিয়ে শংকা থেকেই যাচ্ছে। ঠিক এই জায়গাগুলোতে সম্ভবত আমাদের মার্কেটপ্লেসগুলোকে আরো বেশি ফোকাস দেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এছাড়াও আমরা যারা ক্রেতা, তাদের ও উচিত ভেন্ডরদের রেটিং দেখে বা রিভিউ দেখে তার প্রোডাক্টটি কেনা; সেক্ষেত্রে আমাদের ও প্রতারিত হওয়ার সুযোগ কম থাকে।
সব ধরণের প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য দারাজ, আজকের ডিল বাকিদের তুলনায় অনেকটাই হয়তো এগিয়ে অনেকদিন মার্কেট সাপোর্টের জন্য; এছাড়াও পিকাবো, বাগডুম, কিকসা, মুক্তমল, এন আর বি বাজার ইত্যাদিও ভালো করছে। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করা রকমারী ডট কম বা চাল-ডাল মার্কেটপ্লেসগুলো ও নিজ নিজ ডিপার্টমেন্টে ধরে রেখেছে তাদের আধিপত্য। আরো অনেক ওয়েবসাইট আছে যারা শুরু করেছে এবং ভালোভাবেই প্রস্তুত হচ্ছে মার্কেটপ্লেসটাকে আরো কম্পিটেটিভ করার জন্য।
ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি মোটামুটি বড় হচ্ছে এবং বলা চলে এটা আমাদের ভবিষ্যত অর্থনিতীর একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হতে যাচ্ছে। এখন থেকে আমাদের সচেতন হতে হবে, বিশ্বের সাথ তাল-মিলিয়ে সমান গতিতে এগিয়ে যেতে হবে। এছাড়াও অনলাইনে কাস্টোমার সার্ভিসের নামে যারা প্রতিনিয়ত প্রতারণা করছে তাদের কে দমনের জন্য ও সুনির্দিষ্ট আইন ও আইনের বাস্তবায়ন জরুরী। ২০১৯ সাল দরজায় কড়া নাড়ছে, এখন আর পিছনে ফেরার সুযোগ নেই; এগিয়ে যেতে হবে বহুদূরে।